বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

 পুঁজিবাজার   থেকে ১২৫  কোটি টাকা তুলবে মীর আক্তার


Published: 2018-10-20 13:28:29 BdST, Updated: 2024-04-24 03:20:21 BdST

বিজনেস ওয়াচ প্রতিবেদক:

নির্মাণ ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে পুঁজিবাজার   থেকে ১২৫ পকাটি টাকা তুলবে মীর আক্তার   হোসেন লিমিটেড। এ অর্থ দিয়ে ভারী যন্ত্রপাতি ক্রয়,  প্রধান কার্যালয়ে ভবন নির্মাণ, দুটি প্লান্ট ওয়্যারহাউজ এবং ওয়ার্কশপ নির্মাণ করবে  প্রতিষ্ঠানটি। এর মাধ্যমে  দেশেরর অর্থনীতিতে আরও অবদান রাখা সম্ভব হবে।

বুধবার ১৭ অক্টোবর সন্ধ্যায় রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক   হোটেল  সোনারগাঁওয়ে অনুষ্ঠিত রোড শো অনুষ্ঠানে  কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মীর নাসির   হোসেন এসব কথা বলেন। বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে  প্রাথমিক গণ প্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে বাজার   থেকে অর্থ উত্তোলন করতে  কোম্পানির এ আয়োজন। মীর নাসির   হোসেন বলেন, যুগ যুগ ধরে  দেশের ব্যবসা করে আসছে মীর আক্তার   হোসেন লিমিটেড। আজ  প্রতিষ্ঠানটি অবকাঠামো নির্মাণে  দেশের অদ্বিতীয়।

তিনি বলেন,  দেশের অবকাঠামো খাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এ সম্ভাবনাকে মীর আক্তার   হোসেন লিমিটেড কাজে লাগাতে চায়। এ মাধ্যমে  দেশেরর অর্থনীতিতে আরও  বেশি অবদান রাখা সম্ভব হবে। আর অতীতেও  দেশেরর অর্থনীতিতে অবদান রেখেছে  প্রতিষ্ঠানটি। মীর আক্তার   হোসেন লিমিটেড শতভাগ করপোরেট  প্রতিষ্ঠান, একই সঙ্গে  কোম্পানিটিতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বিদ্যমান।

রোড  শোতে  যোগ্য বিনিয়োগকারী হিসেবে অংশ নিয়েছে মার্চেন্ট ব্যাংকার,  পোর্টফোলিও ম্যানেজার, অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট  কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড, স্টক ডিলার, ব্যাংক, আর্থিক  প্রতিষ্ঠান, বিমা  কোম্পানি, অলটারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড ম্যানেজার, অলটারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড, অনুমোদিত পপনশন ও  প্রভিডেন্ট ফান্ড, ইতিমধ্যে বিনিয়োগ করা বৈদেশিক বিনিয়োগকারী এবং কমিশন অনুমোদিত অন্যান্য  প্রতিষ্ঠান।

কোম্পানিটির ইস্যু ম্যানেজারের দায়িত্বে রয়েছে আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড। রেজিস্ট্রার টু দ্য ইস্যু হিসেবে কাজ করছে সিটিজেন সিকিউরিটিজ এন্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড। রোড শোতে আইডিএলসি ফাইন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ খান বলেন,  আমরা সব সময় আইপিওর কাজ করি না। ভালো  কোম্পানি  পেলেই কেবল সেটিকে বাজারে আনার কাজ করে আইডিএলসি। এ পর্যন্ত আইডিএলসির মাধ্যমে যতগুলো ইস্যু বাজারে এসেছে  সেগুলোর দিকে ফিরে তাকালে বুঝা যায়  প্রতিষ্ঠানটি কেমন  কোম্পানি আনতে কাজ করেছে। ভালো, বড় ও মান সম্মত  কোম্পানি বাজারে আনার চেষ্টা আমরা সব সময় করে থাকি। তেমনই মীর আক্তার   হোসেন লিমিটেড  দেশেরর একটি স্বনামধন্য  কোম্পানি। গত ৫ বছরে আর্থিক  প্রতিবেদন এবং মুনাফা  প্রবৃদ্ধির দিকে তাকালে বুঝা যায় তাদের ভালো পারফরমেন্স রয়েছে।

তিনি বলেন, অবকাঠামো নির্মানে বাংলাদেশে পবশ সম্ভাবনা রয়েছে। মীর আক্তার হোসেন লিমিটেড সেখানে অবদান রাখবে বলে আশা করছি। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাবেক সভাপতি রকিবুর রহমান বলেন, ভালো  কোম্পানি যতক্ষণ পর্যন্ত বাজারে আসবে না ততক্ষণ পুঁজিবাজারের উন্নতি হবে না। মীর আক্তার   হোসেন লিমিটেড বাজারে আসছে তা অত্যন্ত আনন্দের খবর। কারণ দীর্ঘ দিন ধরে  দেশের সুনামের সঙ্গে ব্যবসা করছে  কোম্পানিটি।

কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মীর নাসির হোসেনকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনার উপর আস্থা রেখে যেসব বিনিয়োগকারী শেয়ার কিনবেন তাদেরকে উজার করে ডিভিডেন্ড দিবেন। বড় বড়  কোম্পানির উদ্যোক্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ব্যাংকের ঋণ নিয়ে ব্যবসা সম্প্রসারণ না করে আপনারা ক্যাপিটাল মার্কেটে আসুন। এখানে আসলে জবাবদিহিতার মধ্যে থাকবেন। তাতে আপনাদের  প্রতিষ্ঠান টেকসই হবে।

কোম্পানির পরিচালক শামা ই জাহের বলেন, আন্তর্জাতিক মানের মহাসড়ক-সেতুর পাশাপাশি বিমানবন্দরের উন্নয়ন, কল-কারখানা, হাসপাতাল, পাঁচতারকা   হোটেল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভবন, রেলপথ, বিদ্যুত্ উৎ্পাদন কেন্দ্র নির্মাণ কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে মীর আক্তার হোসেন লিমিটেড।বর্তমানে মীর আক্তার হোসেন লিমিটেডের ৪ হাজার ৫৩২ কেটি টাকার ৩৭  প্রজেক্ট চলমান রয়েছে। এগুলো হচ্ছে-কক্সবাজার বিমান বন্দরের (ফেজ-১) কাঁচপুর,  মেঘনা,  গোমতী ২য় ব্রিজ, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপেসওয়ে  প্রজেক্টের আবাসিক ভবন, দুল্লামারি  থেকে টাঙ্গাইলের ২২ দশমিক ৪ কিলোমিটার সড়কের ডাবল লেন  থেকে ৪ লেনে উন্নীতকরণ, রেললাইন, সিলেট শহরের বাইপাস সড়ক, তৃতীয় কর্ণফুলি ব্রিজ  প্রজেক্টের ৮ কিলোমিটার ৪ লেনের সড়ক, রাজধানীর উত্তরায় স্বল্প ও মধ্য আয়ের মানুষের জন্য আবাসন  প্রকল্প, রাজশাহী বিভাগে ৮ টি ব্রিজের কাজ চলমান রয়েছে। তিনি আরও বলেন,  কোম্পানিটিতে ৪৪০ জন দক্ষ  প্রকৌশলী কাজ করছে। এছাড়া ৩ হাজার ৩৯০ জন দক্ষ কর্মী রয়েছে মীর আক্তার   হোসেন লিমিটেডের।

তথ্যমতে,  কোম্পানিটি বাজার   থেকে ১২৫  কোটি টাকা তুলতে চায়। উত্তোলিত অর্থ   থেকে কোম্পানিটি ৪৯ পকাটি টাকা দিয়ে ভারী যন্ত্রপাতি, ১২ পকাটি টাকা দিয়ে  প্রধান কার্যালয়ে ভবন নির্মান, ১০ কোটি টাকা দিয়ে দুটি প্লান্ট, সাড়ে ১০ কোটি টাকা দিয়ে ওয়্যার হাউজ এবং ওয়ার্কশপ, ৪০ কোটি টাকা দিয়ে ব্যাংক ঋণ এবং বাকী সাড়ে ৩ কোটি টাকা আইপিও খরচে ব্যবহার করার পরিকল্পনা রয়েছে  প্রতিষ্ঠানটির। কোম্পানিটি ৩০ জুন, ২০১৮  তারিখে সমাপ্ত হিসাববছরে ৩১৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা আয় করেছে। আর কর পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ৬১ কোটি ৮৭ লাখ টাকা।

সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।