ঢাকা চেম্বারের আশঙ্কাবৈশ্বিকবাজারে  তৈরি পোষাকের বাজার হারাতে পারে বাংলাদেশ

বিজনেস ওয়াচ প্রতিবেদক:

আন্তর্জাতিক বজারে পোষাক খাতের পণ্যের মূল্য কমে যাওয়া এবং পোষাক খাতের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিতকরার জন্য ক্রেতার ক্রমাগত চাপের কারণে  বৈশ্বিকবাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোষাক খাতের বাজার হারানোর আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ঢাকা চেম্বারের সভাপতি ওসামা বিন তাসীর।  বৃহস্পতিবার (২ মে) ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের তৈরি পোষাক খাতের টেকসই উন্নয়ন’ প্রেক্ষিত কনক্লেভ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুন্সী, প্রধান অতিথি এবং বাংলাদেশ পোষাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি ড. রুবানা হক বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

 বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগের প্রায় ১৮% হয়ে থাকে তৈরি পোষাক খাতে, যার আর্থিক মূল্য ৪৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। তৈরি পোষাক রপ্তানিতে আমরা চীনের পরই দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছি, তৈরি পোষাক খাতের বৈশ্বিক বাজার ৪৪৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং এখাতের বৈশ্বিক মোট রপ্তানির ৬.৫% বাংলাদেশ হতে রপ্তানি হয়ে থাকে। এখাতের শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি, জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি, কমপ্লায়েন্স সম্পর্কিত ব্যয় বৃদ্ধি ইত্যাদি কারণে  বাজার হারানোর সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য আগামী ৫ বছরের জন্য তৈরি পোষাক খাতের সকল পণ্যের (প্রচলিত ও অপ্রচলিত) জন্য ৫% হারে নগদ প্রণোদনা প্রদানের প্রস্তাব করেন। পাশাপাশি এখাতের সামগ্রিক উন্নয়নে মানবসম্পদের দক্ষতা উন্নয়নের ওপর জোরারোপের পাশাপাশি আগামী ৫ বছরের জন্য জ্বালানির মূল্য নির্ধারনে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা প্রণয়নের আহ্বান জানান।

 

এসময় বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুন্সী বলেন, বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকার জন্য বাংলাদেশের তৈরি পোষাক খাতের জন্য সুনিদিষ্ট সময়ের জন্য প্রস্তাবিত প্রণোদনা একান্ত আবশ্যক। বিভিন্ন বাইয়ং হাউজ এবং এজেন্সীর মাধ্যমে পণ্য কেনার কারণে আমাদের তৈরি পোষাক খাতের উদ্যোক্তাবৃন্দ বিভিন্ন ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠানের নিকট হতে যথোপযুক্ত দাম পাচ্ছে না। এজন্য ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠানসমূহ যেন পোষাক খাতের উদ্যোক্তাদের নিকট হতে সরাসরি পণ্য ক্রয় করেন, সে ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণের জন্য বিজিএমইএ’র প্রতি আহ্বান জানান।

বাংলাদেশ পোষাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)’র সভাপতি ড. রুবানা হক বলেন, তৈরি পোষাক খাতের টেকসই উন্নয়নের জন্য সরকারের সহযোগিতা একান্ত আবশ্যক। আমরা এ খাতের ইতিবাচক সংকটে ভুগছি এবং আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদের ইতিবাচক ইমেজ গড়ে তোলার জন্য গণমাধ্যমের সহযোগিতা খুবই জরুরী। তৈরি পোষাক খাতকে টেকসই করার পাশাপাশি ব্যবসা পরিচালনার ব্যয় হ্রাসের জন্য আমাদের সঠিক নীতিমালা গ্রহণ ও এর বাস্তবায়ন, যথাযথ তথ্য-উপাত্ত ব্যবহার খুবই জরুরী। এ খাতের সার্বিক উন্নয়নে উদ্যোক্তা-ক্রেতা প্রতিষ্ঠান, শ্রমিক-গণমাধ্যম, গবেষক সহ সংশ্লিষ্ট সকল স্টেকহোল্ডারদের সমন্বয়ের উপর জোরারোপ করেন। মুক্ত আলোচনায় অন্যান্যের মধ্যে ঢাকা চেম্বারের  সাবেক সভাপতি আসিফ ইব্রাহীম, বেনজীর আহমেদ, বিজেএমইএ’র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ফয়সাল সামাদ, পরিচালক মীরান আলী, ইনামুল হক খান, মোহাম্মদ আব্দুল মোমেন, বিকেএমইএ’র  সাবেক সভাপতি ফজলুল হক, এইচএনএম’র প্রতিনিধি রজার, বেস্ট সেলার’র সাসটেইএ্যাবল ম্যানেজার জাহাঙ্গীর আলম, ইনডিটেক্স’র মো: রেজাউল করিম ভূইয়্যা ও কামরুল হাসান, ঢাকা চেম্বারের  সাবেক ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি হায়দার আহমদ খান, এফসিএ, বাংলাপোষাক-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ সোহেল বক্তব্য রাখেন।