04/30/2024
Anisur rahman
2022-06-27 22:12:00
নিজস্ব প্রতিবেদক : নির্মাণ সামগ্রীর অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে চলমান কাজসমূহের মূল্য সমন্বয় ও নতুন রেট সিডিউলের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ঠিকাদার ঐক্য পরিষদ। প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সাথে বৈঠক করে এ দাবি জানায় তারা। রবিবার ( ২৬ জুন ) দুপুরে আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)’য় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বাংলাদেশ ঠিকাদার ঐক্য পরিষদের সভাপতি রফিক আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক ম. আব্দুর রাজ্জাক, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ কনস্ট্রাকশন ইন্ডাস্ট্রির (বাসি) ডিরেক্টর হাসান মাহমুদ বাবু, ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. বশির আহমেদ, সম্রাট এন্টারপ্রাইজের মোয়াজ্জেম হোসেনসহ দেশের নামকরা ঠিকাদারি কোম্পানির স্বত্বাধিকারী ও মনোনীত প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় ঠিকাদার ঐক্য পরিষদের নেতারা বলেন, উন্নয়নবান্ধব বর্তমান সরকারের দুরদর্শিতা এবং কার্যকর পদক্ষেপসমূহের কারণে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের কাতারে সমাসীন। বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের সঠিক ও সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশকে মাথা উঁচু করে দাঁড় করানোর জন্য সরকার বদ্ধ পরিকর। সরকারের গৃহীত বিভিন্ন ভৌত অবকাঠামোসহ উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে সহায়ক হিসেবে সারাদেশের প্রান্তিক পর্যায়ের ঠিকাদারবৃন্দ সাফল্যের সাথে বাস্তবায়ন করে আসছে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় বিগত এক বছরের অধিক সময় ধরে নির্মাণ প্রকল্পের মূল উপকরণসমূহ যেমন- লৌহ ও লৌহজাতীয় দ্রব্য, সিমেন্ট, পাথর, ইট, বিটুমিন, ডিজেল, অ্যালুমিনিয়াম, বিল্ডিং ফিনিশিং আইটেম ইত্যাদি দ্রব্যাদিসহ এ খাতের প্রায় সকল প্রকার নির্মাণ সামগ্রীর মূল্য অস্বাভাবিক ও লাগামহীনভাবে বৃদ্ধি পেয়ে অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে।
তারা জানায়, বর্তমানে প্রতিটন রডের বর্তমান মূল্য ৯০ হাজার টাকা থেকে ৯৫ হাজার টাকা হয়েছে যা ২০২১ সালের মার্চ মাসে ছিল ৫৫-৬০ হাজার টাকা। অর্থ্যাৎ শতকরা বৃদ্ধির হার ৬০ শতাংশ এর অধিক। পানি সরবরাহ, পয়নিষ্কাশন, বৈদ্যুতিক সামগ্রী, ইলেক্ট্রো ম্যাকানিক্যাল দ্রব্য সমূহের মূল্যও ৪০-৯৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়াও এ শিল্পের সাথে জড়িত শ্রমিক, সুপারভাইজার ও দক্ষ জনবলের মজুরিও শতকরা ৬০-৭০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। জ্বালানি তেল বিশেষ করে ডিজেলের মূল্য ৬৫ টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৮০ টাকা হওয়ার ফলে নির্মাণ সামগ্রি পরিবহন ও যন্ত্রপাতি চালন ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি, চলমান রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতিতে আমদানীকৃত সকল নির্মাণ মালামালের ও যন্ত্রপাতির মূল্যও ক্রমান্বয়ে আশংকাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ ছাড়া নির্মাণ প্রকল্পে ব্যবহৃত পানি ও বিদ্যুত বিল চুক্তিকৃত জধঃব এর সাথে সন্নিবেশিত না থাকায় ঠিকাদারকে তা পরিশোধ করতে হয়। গত অর্থ বছরে দরপত্র দাখিলের সময় ৫% হারে অওঞ ধার্য্য ছিল এখন তা ৭% করা হয়েছে এমন পরিস্থিতিতে প্রকল্পের অগ্রগতিতে অতি মন্থরতা দেখা দিয়েছে, বাস্তব অগ্রগতি খুবই হাতাশাব্যঞ্জক। কাজের স্বাভাবিক অগ্রগতি অর্জিত না হওয়ার ফলে ঠিকাদারগণ বিল পাচ্ছেন না। ফলে গৃহীত ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করাও তাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না বিধায় ব্যাংক হতে আর্থিক সহায়তা প্রাপ্যতা অনিশ্চিত হয়ে যাচ্ছে এবং ঠিকাদার গণের আর্থিক সক্ষমতা ব্যাপকভাবে হ্রাস পাচ্ছে। নির্মাণ সামগ্রীর সীমাহীন অসহনীয় উর্দ্ধগতিতে ঠিকাদারগণ মারাত্মকভাবে আর্থিক দিক দিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এমতাবস্থায় সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের চলমান কাজের মূল্য সমন্বয় ও নতুন রেট সিডিউল প্রনয়নসহ দফা দাবি জানান তারা।
দাবি গুলো হলো:বর্তমান চলমান কাজগুলোর Price Adjustment ধারা প্রয়োগ করে চলমান চুক্তিবদ্ধ কাজের দর সমন্বয় করা অথবা চলমান কাজে নির্মাণ সামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধি জনিত ক্ষতিপুরন দেওয়া। প্রতিটি দরপত্রে কাজ বাস্তবায়নের সময় বিবেচনা ব্যতিরেকে পিপিআর অনুযায়ি অত্যাবশ্যকীয় মূল্য সমন্বয় ধারা সন্নিবেশিত করা। প্রকল্পের কাজে ব্যবহৃত পানি ও বিদ্যুৎ সংক্রান্ত খরচ সব Rate Schedule এ সন্নিবেশিত করা এবং বর্তমান পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতিতে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাবে নির্মাণ সামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধির বিপরীতে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সুপারিশে অর্থ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রতিটি নির্মাণ কাজের প্রাক্কলনে Price Contingencyএর আওতায় প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ করার দাবি জানান তারা।