মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশে বিনিয়োগের বড় বাধা জমির স্বল্পতা গ্যাসের মজুদ কমে যাওয়া ও অপর্যাপ্ত বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা : যুক্তরাষ্ট্র


Published: 2022-07-31 07:14:24 BdST, Updated: 2024-04-23 21:57:20 BdST


নিজস্ব প্রতিবেদক: জমির স্বল্পতা, প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুদ কমে যাওয়া এবং অপর্যাপ্ত বিদ্যুৎ বিতরণ বাংলাদেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) রাত ১০ টায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস কর্তৃক প্রকশিত বাংলাদেশ কান্ট্রি কমার্শিয়াল গাইড শীর্ষক এক প্রতিবেদেনে একথা বলা হয়েছে। বাংলাদেশ বা বিশ্বের অন্যান্য ১৬০টি দেশ ও অর্থনীতিতে ব্যবসা করার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোকে সচেতন সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের সহায়তায় যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড অ্যাসোসিয়েশন এ গাইড লাইন তৈরি করে। শুধু বাজার পরিস্থিতি নয়, সরকারগুলো কীভাবে আন্তর্জাতিক শ্রম মানদণ্ড অনুসরণ করে, দায়িত্বশীল ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডের সক্ষমতা গড়ে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়ে এবং জলবায়ু সংকটের প্রভাব মোকাবিলায় প্রশমন ও অভিযোজনের জন্য নীতিমালা বাস্তবায়ন করে – তাও রয়েছে এই প্রতিবেদনগুলোতে। প্রতিবেদনে বাংলাদেশে ব্যবসা করতে গেলে একটি কোম্পানিকে কী ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে, সেইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর অবিরাম আগ্রহের নয়টি খাতে তাৎপর্যপূর্ণ সম্ভাবনাগুলোও বিশদভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে গত এক দশকে তুলনামূলকভাবে শক্তিশালী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সত্ত্বেও, বিনিয়োগের জলবায়ু সীমাবদ্ধতা, জ্বালানি ও পরিবহন অবকাঠামোর ঘাটতি এবং একটি অস্বচ্ছ নিয়ন্ত্রক পরিবেশ বাংলাদেশকে উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনে বাধা দিয়েছে।
এতে আরো বলা হয়েছে, গত এক দশকে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, কিন্তু বিদ্যুতের আরও নির্ভরযোগ্য এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক অ্যাক্সেস নিশ্চিত করতে ট্রান্সমিশন এবং ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেমের উপর আরো নজর কাজ করা প্রয়োজন। এছাড়া সমাজের সকল স্তরে দূর্নীতি ছড়িয়ে পড়েছে। যা বিনিয়োগকে নিরুৎসাহিত এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত করে।
দেশের স্বনামধন্য কোম্পানিগুলি অভিযোগের ভিত্তিতে বলা হয়েছে যে, বাংলাদেশ জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) অসঙ্গতিপূর্ণভাবে আগের বছরের ব্যবসার ট্যাক্স রিটার্নগুলিকে নতুন করে যাচাই-বাছাই করে। এই প্রক্রিয়া চলাকালীন, স্বাভাবিক ব্যবসায়িক কার্যক্রম যেমন ব্যাংঙ্কিং, বিদেশী কর্মীদের জন্য অভিবাসন পদ্ধতি এবং শাখা অফিসের লাইসেন্সিংয়ের অনুমতি পেতে দেরী হওয়া কিংবা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যেতে পারে। অতিতে রাজনৈতিক অস্থিরতা, এছাড়া স্থানীয় বা জাতীয় নির্বাচনের সময় উদ্ভূত পরিস্থিতি অতীতে ব্যবসায়িকক কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে যা সরবরাহ ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করেছে যদিও ২০১৪ সাল থেকে তা উত্তরণ ঘটেছে। কিন্তু নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ কিছু বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সুযোগকে বাধাগ্রস্ত করেছে। যেমন বাংলাদেশ ২০১৬ সালের জুলাই এ ঢাকার হলি আর্টিসান বেকারি রেস্তোরাঁয় সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী হামলা দেখেছে (ইসলামিক স্টেট অফ ইরাক অ্যান্ড আল-শাম - আইএসআইএস দ্বারা দাবি করা হয়েছে)। যেখানে বাইশ জন নিহত হয়েছে। যাদের বেশিরভাগই বিশেী। তাদের মধ্যে একজন মার্কিন নাগরিকও রয়েছে। ২০১৬ সালের জুলাইয়ের এ হামলার আগে বাংলাদেশে এমন বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। যেখানে বিদেশী এবং ব্লগাররা আইএসআইএস এবং আল-কায়েদা লক্ষ্যবস্তুুতে পরিনত হয়েছিল। তবে বাংলাদেশে সক্রিয় জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করেছে। যদিও চরমপন্থী হামলা দেশের জন্য উদ্বেগের বিষয় বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।