শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ঝুঁকির মুখে আবাসন শিল্প; সমাধান চান ব্যাবসায়ীরা


Published: 2017-11-12 04:41:10 BdST, Updated: 2024-04-19 01:12:33 BdST

বিজনেস ওয়াচ প্রতিবেদক:২০১০ সালের পর থেকে দেশের আবাসন শিল্প নানাবিধ প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন। নানা কর আরোপ ও সরকারের নীতি সহায়তার অভাবে আবাসন খাত মারাত্মক ঝুঁকির মুখে। আবাসন খাতকে এগিয়ে নিতে ও কর্মচাঞ্চল্য তৈরিতে সেকেন্ডারি বাজার ব্যবস্থা চালু প্রয়োজন। একই সঙ্গে অ্যাপার্টমেন্টের মূল্য ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আনতে গেইন ট্যাক্স ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ করাসহ রেজিস্ট্রেশন ব্যয় কমানোর দাবি করেছেন এ খাতের ব্যবসায়ীরা।

শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব) ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এর যৌথ সভায় এ সব দাবি জানান ব্যবসায়ীরা।

এসময় ব্যাবসায়ীরা বলেন, কর্মসংস্থানের বড় খাত হওয়া সত্ত্বেও গত চার-পাঁচ বছর ধরে কোম্পানিগুলো কেবল লোকবল ছাঁটাই করছে। বর্তমানে আর্থিক সরবরাহের অভাবে নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, যথাযথ গৃহঋণ না থাকায় বিক্রিত ফ্ল্যাটের রিপ্লেসমেন্ট হচ্ছে না। সময়মত ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করতে না পারায় ঋণ খেলাপি হচ্ছে, উচ্চ রেজিস্ট্রেশন ব্যয়ের ফলে ক্রেতারা রেজিস্ট্রেশনে আগ্রহ হারাচ্ছে, তাই রাজস্ব আয় কমে যাচ্ছে। তাই সম্ভাবনাময় এ খাতকে এগিয়ে নিতে রেজিস্ট্রেশন ব্যয় ও গেইন ট্যাক্স কমানো, সেকেন্ডারি বাজার তৈরি এবং স্বল্প সুদে বিশেষ তহবিল গঠনসহ বেশ কিছু দাবি করা হয়।

রিহ্যাব জানায়, বর্তমানে বাংলাদেশের রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত ব্যয় সাড়ে ১৫ শতাংশ। এর মধ্যে গেইন ট্যাক্স ৪ শতাংশ, স্ট্যাম্প ডিউটি ৩ শতাংশ, রেজিস্ট্রেশন ফি ২ শতাংশ, স্থানীয় সরকার কর ২ শতাংশ এবং ভ্যাট দেড় থেকে সাড়ে ৪ শতাংশ। তাই রেজিস্ট্রেশন ব্যয় সাড়ে ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে সাড়ে ৬ শতাংশে কমিয়ে আনা জরুরি।

বর্তমানে ডেভেলপারদের জন্য ৫টি শ্রেণিতে আবাসিকে প্রতি বর্গমিটারে ৩০০ টাকা থেকে ১৬০০ টাকা আয়কর দিতে হচ্ছে। এ ছাড়া বাণিজ্যিকে প্রতি বর্গমিটারে দিতে হচ্ছে ১২০০ টাকা থেকে ৬৫০০ টাকা। আয়করের এ হারকে প্রতি বর্গমিটারের আবাসিকের জন্য ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা এবং বাণিজ্যিকের জন্য প্রতি বর্গমিটারে ৫০০ টাকা থেকে ২৫০০ টাকা আয়কর নামিয়ে আনার দাবি করেন। গেইন ট্যাক্স ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ করার দাবিও জানানো হয়।

দেশের ফ্ল্যাটের সেকেন্ডারি বাজার ব্যবস্থা নেই। সেকেন্ডারি বাজার ব্যবস্থা গড়ে উঠলে নতুন একটা পেশাজীবি গড়ে উঠবে। এই সেক্টরে কর্মচাঞ্চল্য তৈরি হবে। সেকেন্ডারি বাজার ব্যবস্থার প্রচলন একদিকে যেমন এই শিল্পকে এগিয়ে নেবে তেমনি বাজারে অর্থের লেনদেনও বাড়াবে। অন্যদিকে সরকারও তার রাজস্ব আয় বৃদ্ধি করতে সক্ষম হবে।

ফ্ল্যাট পুনঃবিক্রয়ের ক্ষেত্রে মালয়েশিয়াসহ উন্নয়নশীল দেশগুলোর মত রেজিস্ট্রেশন খরচ সর্বমোট ৩ শতাংশ নির্ধারণ করে সেকেন্ডারি বাজার ব্যবস্থার প্রচলন করা এখন সময়ের দাবি। এছাড়াও আবাসন খাতে ৫ শতাংশ সুদে ৩০ বছর মেয়াদে ২০ হাজার কোটি টাকার একটি তহবিল গঠনের দাবি করা হয়।

সভায় এসবিআরের পক্ষ থেকে বলা হয়, ফ্ল্যাট বা জমি রেজিস্ট্রেশন ব্যয় কমানো ও গেইন ট্যাক্স ১৫ শতাংশ থেকে নামিয়ে আনার বিষয়টি বিশেষভাবে বিবেচনা করা হবে। এছাড়াও আবাসন খাতের সংশ্লিষ্ট সমস্যা সমাধানে এনবিআর-রিহ্যাব যৌথ ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করা হবে।

সভায় সভাপতিত্ব করেন রিহ্যাবের প্রেসিডেন্ট আলমগীর শামসুল আলামিন (কাজল)। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এনবিআর চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান। এ সময় রিহ্যাবের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন, ভাইস প্রেসিডেন্ট লিয়াকত আলী ভূইয়া, এনবিআর সদস্য ব্যারিস্টার জাহাঙ্গীর হোসেন ও পারভেজ ইকবাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।