বুধবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৪, ৪ বৈশাখ ১৪৩১

ভূমি ব্যবস্থাপনায় জুনের মধ্যে সারাদেশে ই-মিউটেশন  চালু: ভূমি মন্ত্রী


Published: 2019-05-05 20:38:25 BdST, Updated: 2024-04-17 03:22:52 BdST

বিজনেস ওয়াচ প্রতিবেদক:

চলতি বছরের জুন/জুলাই মাসের মধ্যেই সারাদেশে ভূমি বিষয়ক ই-মিউটেশন ব্যবস্থার প্রবর্তন করা হবে। যার মাধ্যমে অনলাইনে পেমেন্টসহ অন্যান্য সেবা প্রদান করা যাবে। এতে জনগণের ভোগান্তি কমবে।   রোববার (৫ মে) সোনারগাঁও হোটেলে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত “নগরায়ন এবং বিকেন্দ্রীকরণের ক্ষেত্রে আবাসন খাতের প্রতিবন্ধকতা” শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন ভূমি মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। ঢাকা চেম্বার সভাপতি ওসামা তাসীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত  সেমিনারে ভূমি মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী সেমিনারে প্রধান অতিথি এবং ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম বিশেষ অতিথি এবং রিহ্যাব সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

সেমিনারে ভূমি মন্ত্রী ঢাকা শহরের ওপর চাপ কমানোর জন্য নরসিংদী, কুমিল্লাসহ আশেপাশের অন্যান্য এলাকার অবকাঠামো উন্নয়নের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন। সাধারণ জনগণের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে বাসস্থানের সেবা প্রদানের বিষয়টি বিবেচনা করে ফ্ল্যাটের মূল্য নির্ধারণে তিনি এ খাতের উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানান  তিনি।  

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম বলেন, ঢাকা শহর প্রতিনিয়ত অপরিকল্পিতভাবে বাড়ছে। এ শহরকে নিরাপদ ও বাসযোগ্য করতে হলে সকলকে পরিকল্পনামাফিক সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। ঢাকা শহরের প্রতি বর্গফুট এলাকায় প্রায় ৪৯,০০০ মানুষ বসবাস করে। অধিক সংখ্যক এ জনগোষ্ঠীর সেবা নিশ্চিত করতে হলে আমাদের অবশ্যই স্যাটেলাইট সিটি স্থাপন করতে হবে। সম্প্রতি সরকার আরো ১৮টি ইউনিয়নকে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আওতায় নিয়ে এসেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এসব এলাকায় প্রতি বর্গফুটে প্রায় ২৩,০০০ মানুষ বসবাস করে। পরিকল্পিত উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়নের মাধ্যমে এসব এলাকায় নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করা যাবে।

তিনি আরও বলেন, চলতি বছরের জুন/জুলাই মাসে রাজধানীর ২৭টি মাঠকে অত্যাধুনিক সুবিধাসম্বলিত খেলাধূলার উপযোগী করা হবে। এই মাঠগুলোয় সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকতে হবে। এছাড়া সিটি কর্পোরেশন এলাকায় অনলাইন সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য শীঘ্রই “নগর অ্যাপ” নামে একটি অ্যাপভিত্তিক সেবা চালু করতে যাচ্ছে, যার মাধ্যমে কর প্রদান সহ সহজেই অন্যান্য সেবা নিশ্চিত হবে।

স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি ওসামা তাসীর বলেন, অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের মতো বাংলাদেশেও শহরগুলো গ্রামের চেয়ে অর্থনীতিতে বেশি ভূমিকা রাখছে এবং বর্তমানে বাংলাদেশের জিডিপির ৬৫ শতাংশই আসছে নগর থেকে। কিন্তু অপরিকল্পিত নগারয়নের কারণে ঢাকা বিশ্বের ২য় বসবাসের অযোগ্য নগরে পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, অপর্যাপ্ত অবকাঠামো, দুর্বল পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রভৃতি কারণে ইতোমধ্যে গৃহীত বিকেন্দ্রীকরণের উদ্যোগসমূহ কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি। রিহ্যাব সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন বলেন, রিহ্যাব সদস্যবৃন্দ নিজেদের অর্থায়ন ও পরিশ্রমের মাধ্যমে দেশের জনগণের বাসস্থানের সুবিধা প্রদানের জন্য কাজ করে যাচ্ছে এবং ইতোমধ্যে প্রায় ২ লক্ষ অ্যাপার্টমেন্ট ও ৭০ হাজার প্লট গ্রাহকদের কাছে হস্তান্তর করেছে। তিনি ঢাকা শহরের ওপর চাপ কমানোর জন্য নিকটবর্তী এলাকাসমূহের অবকাঠামো উন্নয়ন ও নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতকরণের উপর জোরারোপ করেন। তিনি অ্যাপার্টমেন্ট ও প্লট ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশন ফি কমানো এবং ব্যাংক ঋণের সুদের হার কমানোর প্রস্তাব করেন। সেমিনারে স্থাপত্য অধিদপ্তরের প্রধান স্থপতি কাজী গোলাম নাসির সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। নির্ধারিত আলোচনায় ঢাকা চেম্বারের প্রাক্তন পরিচালক ও এ্যাসেট ডেভেলপমেন্টস অ্যান্ড হোল্ডিংস লিমিটেডের চেয়ারম্যান সেলিম আক্তার খান, ডিসিসিআই পরিচালক ইঞ্জিঃ মোঃ আল আমিন এবং ভিসতারা’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক স্থপতি মোস্তফা খালিদ পলাশ অংশগ্রহণ করেন। আলোচনায় তাঁরা এ খাতের উন্নয়নে সরকার ও বেসরকারী খাতের সমন্বয় বৃদ্ধি, দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন, পরিবেশবান্ধব ও টেকসই প্রযুক্তির ব্যবহার, প্লট ও ফ্ল্যাটের ক্রয়-বিক্রয়ে আরোপিত শুল্ক হ্রাসকরণ এবং সর্বোপরি এ খাতকে একটি “থ্রাস্ট সেক্টর” হিসেবে ঘোষণার আহ্বান জানান। মুক্ত আলোচনায় ডিসিসিআই আহ্বায়ক আরমান হক, বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. আহসানুল কবির, প্রাক্তন ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুস সালাম, এম এস সেকিল চৌধুরী এবং প্রাক্তন পরিচালক এ কে ডি খায়ের মোহাম্মদ খান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।   

সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।