মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

এবারও হচ্ছে না আয়কর মেলা, অফিসে ‘ওয়ানস্টপ’ সেবা


Published: 2023-10-17 12:23:35 BdST, Updated: 2024-04-30 04:40:38 BdST


নিজস্ব প্রতিবেদক : বাড়তি খরচের বিবেচনায় চলতি বছরও আয়কর মেলা আয়োজন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। তবে, করদাতাদের সুবিধার্থে দেশের সব কর অঞ্চলে নভেম্বর মাসজুড়ে দেওয়া হবে ওয়ানস্টপ বা বিশেষ সেবা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সূত্র এ তথ্য জানা গেছে। জানা গেছে, গত বছরের মতো এবারও আয়কর মেলার আদলে কর অফিসে করদাতারা পাবেন ‘ওয়ানস্টপ’ সেবা। এছাড়া অনলাইনে এ চালান, বিকাশ, রকেট, নগদ কিংবা ইউক্যাশ ব্যবহার করে ঘরে বসেই অনলাইনে কর দেওয়ার সুবিধা পাবেন করদাতারা। ২০২০, ২০২১ ও ২০২২ সালে করোনা মহামারির কারণে আয়কর মেলা বন্ধ ছিল। মহামারি শেষ হলেও বাড়তি খরচের বিবেচনায় এবারও আয়কর মেলা আয়োজনে না করা সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। এ বিষয় জানতে চাইলে এনবিআরের পরিচালক (জনসংযোগ) সৈয়দ এ মুমেন জাগো নিউজকে বলেন, কর মেলা না হলেও নভেম্বর মাসব্যাপী প্রতিটি কর অঞ্চলে মেলার পরিবেশে করদাতারা আয়কর রিটার্ন দাখিলসহ সব ধরনের সেবা নিতে পারবেন।

তিনি বলেন, করদাতাদের তথ্য সরবরাহ করার জন্য কর অঞ্চলগুলো ছাড়া সচিবালয়, অফিসার্স ক্লাব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে অস্থায়ীভাবে কর তথ্য ও সেবা কেন্দ্র চালু করা হবে। এসব কেন্দ্রেও আয়কর রিটার্ন দাখিলসহ অন্যান্য করসেবা ও কর সংক্রান্ত হালনাগাদ তথ্য পাওয়া যাবে। এনবিআরের শীর্ষ এক কর্মকর্তা বলেন, আগামীতে আর কোনো দিন কর মেলা হবে না। নভেম্বর মাসজুড়ে করদাতাদের সেবা দেওয়া হবে। করদাতাদের রিটার্ন দাখিলে অভ্যস্ত করা হবে। করদাতাদের সুবিধার্থে এনবিআর বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যা তাদের মাঠপর্যায়ের সব কর অফিসগুলো বাস্তবায়ন করবে।
এনবিআরের নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো হলো-
>> আয়কর মেলার পরিবর্তে কর কমিশনার অঞ্চলগুলোতে জাঁকজমকপূর্ণভাবে ও উৎসবমুখর পরিবেশে ১ থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত আয়কর রিটার্ন গ্রহণের জন্য করদাতাদের সেবা দেওয়া হবে।

>> প্রতিটি অফিসে উন্মুক্ত স্থান বা কার পার্কিং এরিয়ায় রিটার্ন গ্রহণ বুথ ও হেল্প ডেস্ক স্থাপন করে রিটার্ন গ্রহণের পরিবেশকে আকর্ষণীয় করে তুলতে হবে। একই সঙ্গে রিটার্ন দাখিলকারী করদাতাদের তাৎক্ষণিক প্রাপ্তি স্বীকারপত্রের সঙ্গে রিটার্ন দাখিলের জন্য উৎসাহ দিতে উপহার দেওয়া হবে।

>> সব কর কমিশনার সেবাকেন্দ্রে ই-টিআইএন রেজিস্ট্রেশন ও রি-রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা রাখতে হবে।

>> প্রতিটি কর অঞ্চলের নিজস্ব ওয়েবসাইট তথ্যসহ হালনাগাদ করতে হবে। উক্ত ওয়েবসাইটে আয়কর সংক্রান্ত বিভিন্ন ফর্ম, পরিপত্র, রিটার্ন পূরণের নির্দেশিকা, ভিডিও টিউটোরিয়ালসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য সন্নিবেশ করতে হবে।

>> কর অঞ্চলগুলো নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় প্রচার-প্রচারণা অব্যাহত রাখবে। অন্যান্য মাধ্যমের পাশাপাশি ডিজিটাল মাধ্যমে প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে।

>> সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য সচিবালয় ও অফিসার্স ক্লাবের সদস্যদের জন্য অফিসার্স ক্লাবে রিটার্ন গ্রহণ বুথ ও হেল্প ডেস্ক স্থাপনের মাধ্যমে নভেম্বর মাসের প্রথম দুই সপ্তাহ কর তথ্যসেবা দেওয়া হবে।

>> সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের জন্য সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করে নভেম্বর মাসে দু’দিন করদাতাদের রিটার্ন গ্রহণ ও কর তথ্যসেবা দেওয়া হবে।

>> নভেম্বর মাসব্যাপী করদাতাদের আয়কর রিটার্ন দাখিল ও কর তথ্যসেবা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকে নভেম্বরের আগে প্রেস ব্রিফিং করা।

>> সব কর অঞ্চলের কমিশনাররা তাদের নিজ নিজ কর অঞ্চলের পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন। স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়ে সরকারের নির্দেশনাবলী অনুসরণ করে ব্যবস্থা নেবেন।

>> ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে জাতীয় ট্যাক্স কার্ড ও ঢাকার কর অঞ্চলগুলোর সেরা করদাতাদের সম্মাননা দেওয়ার অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে।

>> ঢাকার বাইরে চট্টগ্রামের চারটি কর অঞ্চলে কেন্দ্রীয়ভাবে ও অন্য সব কর অঞ্চল নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় যথাযথ আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে জেলা ও সিটি করপোরেশনভিত্তিক সেরা করদাতা সম্মাননা দেবে।

>> আগামী ৩০ নভেম্বর জাতীয় আয়কর দিবস ২০২২ উদযাপন করা হবে। এ সময় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে কেন্দ্রীয়ভাবে একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে।

২০১০ সাল থেকে প্রতিবছর কর মেলা আয়োজন করে আসছে এনবিআর। এরই মধ্যে এ কর মেলা সাধারণ করদাতাদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। তবে গত বছরও করোনা বিবেচনায় মেলা অনুষ্ঠিত হয়নি। এনবিআরের আওতাধীন সারাদেশে ৪০টি কর অঞ্চল রয়েছে।

সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।