বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্ববিদ্যালয়ে বাড়ছে এক শ্রেণির শিক্ষকের যৌন অপরাধ


Published: 2017-07-10 13:24:42 BdST, Updated: 2024-04-24 23:12:40 BdST

বিজনেস ওয়াচ প্রতিবেদক: বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের উপর দিন দিন বাড়ছে এক শ্রেণীর শিক্ষকের যৌন হয়রানির ঘটনা। এক্ষেত্রে টোপ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে টিউটোরিয়াল, ইনকোর্স ও আ্যাসাইনমেন্টের নম্বর। যদিও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এসব ঘটনা প্রকাশ্যে আনছেন না শিক্ষার্থীরা। ইউএন উইমেনের জরিপ বলছে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে ৭৬ শতাংশ ছাত্রীই যৌন হয়রানির শিকার হন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন নিপীড়নের ঘটনা তদন্তে হাইকোর্টের পক্ষ থেকে একটি কমিটি করার বিধান থাকলেও তা মানছে না কেউই। আর এ বিষয়ে সচেতনভাবে নির্বিকার বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন।

এক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, ‘কাপড় ওড়না টেনে খুলে দিয়েছে। একটা মেয়ের ওড়না খুলে দেয়া মানে বস্ত্র খুলে দেয়া সমান অপরাধ।’

শিক্ষার সর্বোচ্চ প্রাতিষ্ঠানিক স্তর বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে যখন শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদের এ স্বর জ্ঞানের আলো তখন নিরর্থক।

মাহফুজুর রশিদ ফেরদৌস। আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তড়িৎ কৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ বিভাগীয় শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির। একাধিকবার অভিযোগ করার পরও বহাল তবিয়তেই ছিলেন কর্মক্ষেত্রে। গর্জে উঠেছিল শিক্ষার্থীরা। পোস্টার, ব্যানার আর স্লোগানে কম্পিত হয়েছিল পুরো ক্যাম্পাস। আর এ প্রতিবাদেই হয়েছিল প্রতিকার। চাকরীচ্যুত হয়ে বর্তমানে তিনি রয়েছেন কারাগারে।

আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. হামিদুর রহমান খান বলেন, ‘আমরা যখন বুঝতে পেরেছি এ ব্যাপারে সে জড়িত তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযায়ী তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।’

যৌন হয়রানি বন্ধে উচ্চ আদালতের নির্দেশে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি’ করার কথা বলা হলেও অনেক বিশ্ববিদ্যালয় তার তোয়াক্কা করছে না। যাওবা আছে কার্যকারিতার অভাবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে নামমাত্র কাগজে কলমে পরিণত হয়েছে এগুলো।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের তথ্যমতে দেশের মোট ৩৭টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ২৫টি আর ৯৫ টি প্রাইভেটের মধ্যে ৩৪টিতে এ কমিটি রয়েছে।

শিক্ষার্থী অভিযোগ, ‘যদি স্যারদের সাথে ঘোরাফেরা, সব সময় দেখা না করলে মার্কস দেয় না। মাঝে মাঝে পোশাক নিয়েও খারাপ কথা বলে।’

ইউএন উইমেনের সবশেষ জরিপ অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে ৭৬ শতাংশ শিক্ষার্থী কোন না কোনভাবে যৌন হয়রানির শিকার হন।

সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে এ হার ৮৭ শতাংশ, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬৬ শতাংশ, বিশ্ববিদ্যালয় কলেজগুলোতে ৭৬ শতাংশ, এবং মেডিকেল কলেজে এ হার ৫৪ শতাংশ।

জরিপে বিশাল এ অংশের কথা বলা হলেও এর ছিটেফোঁটার হিসেবও জানেন না বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তাই কমিটি গঠনের পর থেকে কতটি অভিযোগ জমা পড়েছে এ বিষয়ের কোনো সঠিক উত্তর নেই তাঁদের। এত গাফিলতির পরও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে হস্তক্ষেপ করতে আপত্তি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের।

বেসরকারি জরিপে যৌন হয়রানির ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটেছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে।

সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।