মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

অ্যাকর্ডের মেয়াদ বৃদ্ধি চায় না বিজিএমইএ


Published: 2017-08-02 11:42:25 BdST, Updated: 2024-04-16 15:06:34 BdST

বিজনেস ওয়াচ প্রতিবেদক: পোশাক খাতে সংস্কারবিষয়ক ইউরোপের ক্রেতাদের জোট অ্যাকর্ডের দ্বিতীয় মেয়াদে থাকা সংক্রান্ত চুক্তির সমালোচনা করেছেন এ খাতের উদ্যোক্তারা। কোনোভাবেই আর অ্যাকর্ডের মেয়াদ বৃদ্ধি চান না তারা। অ্যাকর্ডকে পোশাক খাতের জন্য নব্য ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি হিসেবে আখ্যায়িত করে তারা বলছেন, অ্যাকর্ডের উদ্দেশ্য ভিন্ন। তাদের কারণে পোশাক খাতে বিপর্যয় নেমে আসবে।  রোববার (৩০ জুলাই) রাতে তৈরি পোশাক রফতানিকারকদের সঙ্গে বিজিএমইএর এক বিশেষ সাধারণ সভায় (ইজিএম) উদ্যোক্তারা এসব কথা বলেন।

উল্লেখ্য, সরকার ও পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএকে পাশ কাটিয়ে অ্যাকর্ড সম্প্রতি দ্বিতীয় মেয়াদে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাদের কার্যক্রমের আওতার মধ্যে ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এসব বিষয়ে সদস্য কারখানা মালিকদের মতামত জানতে এই বিশেষ সাধারণ সভার আয়োজন করে বিজিএমইএ। রাজধানীর হোটেল র‌্যাডিসনে আয়োজিত ওই সভায় বিজিএমইএর বর্তমান ও সাবেক শীর্ষ নেতারাসহ বিপুলসংখ্যক সাধারণ সদস্য উপস্থিত ছিলেন। বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, অ্যাকর্ডের মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্তের অনুমোদন দেওয়া হবে না। অ্যাকর্ডের প্ররোচনায় কিছু এনজিও ও বুদ্ধিজীবীর পক্ষে পোশাক খাতবিরোধী অপপ্রচারের অভিযোগ এনে দেশের স্বার্থে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি। এফবিসিসিআই সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন অ্যাকর্ডকে উদ্দেশ করে বলেন, 'আমাদের সক্ষমতা বাড়াতে আপনারা অনেক কাজ করেছেন। এ জন্য আপনাদের ধন্যবাদ। কিন্তু ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি হওয়ার চেষ্টা করবেন না। আপনাদেরও অনেক সমস্যা ছিল। কিন্তু আমরা আপত্তি করিনি।'

এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি ও হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ. কে. আজাদ অ্যাকর্ডের কর্মকাণ্ডসহ এ খাতের সার্বিক সমস্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে তুলে ধরার প্রস্তাব দেন। সংশ্লিষ্ট বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ রাখার সুপারিশ করেন তিনি। এ. কে. আজাদ বলেন, অ্যাকর্ড অ্যালায়েন্স নিয়ে কথা বলতে হবে। তারা নতুন নতুন শর্ত দেয়। নইলে নন কমপ্লায়েন্ট (কর্মপরিবেশের ঝুঁকি) বলে ব্যবসা ছিন্ন করে।

বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আনিসুর রহমান সিনহা বলেন, পোশাক খাতের সমস্যার কথা বিভিন্ন সময় তুলে ধরলেও নীতিনির্ধারকরা গুরুত্ব দেননি। তারা মনে করেন, আগেও তো সমস্যার কথা বলেছে। কিন্তু এবার সত্যি সত্যি বাঘ এসে গেছে। অ্যাকর্ডের অত্যাচার চরমে চলে গেছে। অ্যাকর্ডের বিষয়ে কঠোর অবস্থান নিতে হবে।

সংগঠনের সাবেক পরিচালক আরশাদ জামাল দিপু অ্যাকর্ডকেন্দ্রিক সংকট মোকাবেলায় বিজিএমইএকে কোনো সিদ্ধান্তে না যাওয়ার প্রস্তাব দেন। তিনি বলেন, বিজিএমইএ কোনো অবস্থান নিলে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে হুমকি আসতে পারে। তারচেয়ে ইস্যুটি রাজনৈতিক নেতৃত্বের মাধ্যমে মোকাবেলা করা উচিত। অন্যদের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস, আবদুস সালাম মুর্শেদী ও কাজী মনিরুজ্জামান, ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি আসিফ ইব্রাহীম প্রমুখ।

রানা প্লাজা ধসের পর ইউরোপের ২২৮টি ক্রেতা, ব্র্যান্ড ও কয়েকটি শ্রমিক সংগঠনের সমন্বয়ে ২০১৩ সালে অ্যাকর্ড গঠিত হয়। জোটের পাঁচ বছরের মেয়াদ আগামী জুনে শেষ হবে। বাংলাদেশের যেসব কারখানা থেকে এসব ক্রেতা পোশাক নেন, এ রকম এক হাজার ৬০০ কারখানার প্রাথমিক পরিদর্শনে চিহ্নিত ত্রুটি এখন সংশোধনের কাজ চলছে।

সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।