04/09/2025
Anisur rahman
2023-10-17 13:51:46
নিজস্ব প্রতিবেদক : গ্যাসের বিপুল পরিমাণ বকেয়া পরিশোধ করতে শুরু করেছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি)। পেট্রোবাংলার সরবরাহ করা গ্যাসের অন্তত ৬০ ভাগই বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু আর্থিক সংকটের কারণে অনেক দিন ধরেই বিল দিতে পারছিল না পিডিবি। সম্প্রতি বকেয়া বিলের প্রায় অর্ধেক পরিশোধ করা হয়েছে, শিগগিরই বাকি বিলও পরিশোধ করা হবে বলে পেট্রোবাংলাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে পিডিবি। বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি বিভাগের পৃথক সূত্র এ খবর নিশ্চিত করেছে। পিডিবির একজন সদস্য জানান, আমরা ধাপে ধাপে বিলগুলো দিতে শুরু করেছি। পর্যায়ক্রমে সব পরিশোধ করা হবে। প্রসঙ্গত, আর্থিক সংকটের কারণে অনেক দিন ধরেই পিডিবি পেট্রোবাংলার গ্যাস বিলের সঙ্গে বেসরকরি এবং সরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদন কোম্পানিকে দর পরিশোধ করতে পারছিল না। একই সঙ্গে পেট্রোবাংলার বিতরণ কোম্পানিকে তারা গ্যাস বিলও পরিশোধ করতে পারছিল না। বিষয়টি পিডিবি পেট্রোবাংলা থেকে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে গড়ায়।
পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার মন্ত্রণালয়কে জানান, পিডিবির কাছ থেকে বিল না পাওয়া গেলে অক্টোবরে এলএনজি আমদানিতে আর্থিক সংকটে পড়তে হবে। তিনি আর্থিক সংকট কাটাতে পিডিবির পাশাপাশি সারকারখানাগুলোর বিল পরিশোধের একটি রোডম্যাপ তৈরি করার বিষয়ে জোর দেন। বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র জানায়, সব মিলিয়ে ২ হাজার ৭১ কোটি টাকা বকেয়া ছিল। এরমধ্যে পিডিবি সম্প্রতি গ্যাস বিতরণ কোম্পানিকে ৮৭১ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে। এর বাইরে আরও এক হাজার ২০০ কোটি টাকা পরিশোধের বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। শিগরিরই পিডিবি এই অর্থ পরিশোধ করবে। জানতে চাইলে বিদ্যুৎ বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, মূলত বিদ্যুতের উৎপাদন পর্যায়ে বড় রকমের ভর্তুকি দিতে হয়। গ্রাহকের বিদ্যুৎ বিলের পরেও অতিরিক্ত অর্থের প্রয়োজন হয়। এই অর্থ আসে সরকারের ভর্তুকি বাজেট থেকে। করোনাকালীন সময়ে অন্যান্য খাতকে সক্রিয় রাখতে সরকারের অতিরিক্ত অর্থের প্রয়োজন হয়েছে। এই বিপুল পরিমাণ অর্থের সংস্থান করতে গিয়ে বিদ্যুতের নিয়মিত ভর্তুকির অর্থ পরিশোধ করা যায়নি। এতেই সংকট তৈরি হয়। তবে আস্তে আস্তে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে। সম্প্রতি পেট্রোবাংলার বিলের পাশাপাশি বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলোকেও বিলের অর্থ পরিশোধ করা শুরু হয়েছে।
জ্বালানি বিভাগ সূত্র বলছে, গত জুলাই মাস থেকে পিডিবি কোনও গ্যাসের বিল পরিশোধ করেনি। এতে এক সঙ্গে বিপুল পরিমাণ বিল বকেয়া পড়ে যায়। কিন্তু এরমধ্যে জ্বালানি বিভাগ থেকে বিষয়টি বিদ্যুৎ বিভাগ এবং সরকারের উচ্চ পর্যায়ে জানানো হয়। গ্যাসের বিল পরিশোধ না করলে এলএনজি আমদানি অব্যাহত রাখা কঠিন হবে। এতে সার্বিক বিদ্যুৎ উৎপাদন ঝুকিতে পড়বে বলে জানানোর পরই পিডিবির বিল পরিশোধের ব্যবস্থা করে দেয় সরকার। জ্বালানি বিভাগ বলছে, এখন প্রতিদিন অন্তত ৭৫০ থেকে ৮৫০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হয়। এই গ্যাসের মধ্যে ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট আমদানির জন্য স্থায়ী চুক্তি রয়েছে। বাকিটা স্পট মার্কেট থেকে কিনতে হয়। নিয়মিত বিল পরিশোধ না করলে পেট্রোবাংলার পক্ষে গ্যাস আমদানি করা সম্ভব নয় বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন