শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

বাঘা তেঁতুল আছে, বুনো ওল নেই দেশে?


Published: 2017-03-13 20:27:43 BdST, Updated: 2024-04-27 07:46:20 BdST

অজয় দাশগুপ্ত

ব্রাহ্মণবাড়ীয়া এলাকাটি প্রায় উপদ্রুত। সে এলাকায় সঙ্গীত তারকা ওস্তাদ খাঁদের বাড়ি-ঘর যাদুঘরে হামলা হয়েছিল। উপমহাদেশের গৌরব সংগীতরতদের বাদ্যযন্ত্রের মতো নিরীহ কিন্তু কালজয়ী উত্তরাধিকারের চিহ্নও ছাড় পায়নি। তারপরও সেখানে শান্তি নেমে আসেনি। নাসিরনগর ও ব্রাহ্মণবাড়ীয়া যেন এক অভিশপ্ত এলাকা হতে চলেছে। যারা গদির লোভে বা সরকারে থাকায় নাকে তেল দিয়ে ঘুমোচ্ছেন তাদের কাল ঘুম ভাঙতে ভাঙতে কোথায় কি ঘটে যায় সেটা ভাবতেও বুক ধড়ফড় করে ওঠে।

এবার সেখানে মানুষকে পথে নামিয়ে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে থাকা মূর্তি সরানো চাওয়ায় যে মিছিল তাতে আতংকিত না হবার কোনো কারণ দেখি না। বাংলাদেশে কি খালি ওই এক এলাকাতেই ধর্মপ্রাণ মানুষেরা বাস করেন? দেশের আরও যত এলাকা টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত জনপদে কি আর কারও কোনো অনুভূতি নেই? তারা কি ধার্মিক নন? আসলে এ এক ধরনের রাজনৈতিক কূটকৌশল। সরকারের বিরুদ্ধে নানাভাবে জনমত গঠন ও জনগণকে রাগিয়ে তোলার কাজটি করতে না পারা বিএনপি-জামায়াত ও সুশীলের ইন্ধন আছে এর পেছনে। তারা সিনে না থাকলেও অন্তরালে আছে। সামনে আছে হেফাজত। আমার মনে একটা প্রশ্ন ঘুরপাক খেতে থাকে, সরকারি দলের মূল পরিচয় কিন্তু রাজপথের দল হিসেবে। দেশের রাজপথে আওয়ামী লীগ অবধ্য ও দুর্দম সেই কাহিনী কি গদির টানে আজ অতীত? না তার জনবলের ওপর আর কোনো বিশ্বাস বা ভরসা নেই? এর প্রতিবাদে তারা একটি মিছিল বা সভা করতে ভয় পাবে। করলেও তা হবে দায়সারা। বদলে আমরা দেখব কম্প্রোমাইজের নামে এসব অপশক্তিকে লাই দিয়ে মাথায় তোলার চক্রান্ত। এ যাবৎ যা ঘটেছে, যখন ঘটেছে সরকারের কিছু নেতা আগ বাড়িয়ে সেখানে গিয়ে ফিরে এসে হাইকমান্ডকে ম্যাসেজ দিয়েছে সমস্যা বা প্রবলেম সলভড। আসলে কি তাই? তোফা দিয়ে বা উৎকোচ দিয়ে কাউকে কিংবা কোনো শক্তিকে কিছুদিন বশে রাখা গেলেও সমস্যা যায় না। এটা কোনোদিন লীগের স্বভাব ছিল না। আমাদের নেতা বঙ্গবন্ধু কখনো সমস্যা জিইয়ে রাখতেন না।

এখন চলছে ভাই ভাই খেলা। এভাবে তাদের আসকারা দিলে তারা আজ মূর্তি সরানোর নামে হিন্দুদের নির্যাতন করার কথা বলছে, কাল নিজেদের ওপর নিজেরা ঝাঁপিয়ে পড়বে। ধর্মের নামে এমন বেসামাল কথা বা উস্কানি কি সরকারকে স্পর্শ করে না? নাকি তারা ভাবে কিছু তোফা, উৎকোচ আর ঘুষ দিয়ে চিরকাল বশে রাখা যাবে? বড় ভুল এই ভাবনা। এভাবেই পাকিস্তান নামক দেশটি এখন ধ্বংসের মুখে। এভাবে আমাদেরও সেদিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। এটি বাংলাদেশের বাইরের কোনো জায়গা না। এদের কথা না বলে কাজে দমন করুন। তাদের ভিতর দেশ, মাটি ও জনগণের জন্য জায়গা তৈরি না হলে বা তার উল্টোস্রোত বন্ধ না হলে পরিণাম সবার জন্য অশুভ হতে বাধ্য। তেতুল কি আমাদের সবাইকে টক বানিয়ে ছাড়বে? উন্নয়নের সমাজকে বানাবে তেতুলের ঘোলা সরবত? কথায় বলে যেমনই বুনো ওল তেমনি বাঘা তেঁতুল। আমাদের দেশের বুনো ওলরা কি ঘরে ঢুকে গেছেন চিরতরে? সুত্র: আমাদের অর্থনীতি

সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।