আশঙ্কা জার্মান চ্যান্সেলরেরমূল্যস্ফীতির ধাক্কা আগামী বছরও থাকবে
Published: 2022-06-04 23:50:24 BdST, Updated: 2025-05-09 17:39:30 BdST
বিজনেস ওয়াচ ডেস্ক : করোনা মহামারির ধাক্কা সামলে বৈশ্বিক অর্থনীতির চাকা পুরোপুরি সচল হওয়ার আগেই নতুন সংকট তৈরি করেছে ইউক্রেন যুদ্ধ। এ যুদ্ধের ফলে ব্যাঘাত ঘটছে বৈশ্বিক অর্থনীতির স্বাভাবিক ধারা। ফলে বাড়ছে মূল্যস্ফীতি। এ পরিস্থিতিতে বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়ছে স্বল্প আয়ের মানুষ। মূল্যস্ফীতির ফলে তাদের ওপর বাড়তি ব্যয়ের যে চাপ তৈরি হচ্ছে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়ে তা সামাল দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে জার্মান সরকার।
তবে এটা করতে গিয়ে দেশটার সরকারের ওপর ভর্তুকির চাপ বাড়ছে। জার্মান সরকার কতটা ভর্তুকির বোঝা নিতে পারবে তা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। জার্মান সরকার যেসব ক্ষেত্রে নাগরিকদের বড় ছাড় দেওয়ার চেষ্টা করছে তার মধ্যে একটি পরিবহণ ও জ্বালানির মূল্যে। তবে এখনও যেহেতু রাশিয়া-ইউক্রেন সংকটের কার্যকর কোনো সমাধান দৃশ্যমান নয় তাই সরকারকে এমন উদ্যোগ সামনে আবারও নিতে হবে বলে মনে করা হচ্চে।
জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শুলজ মনে করছেন, শুধু তিন মাসের কর্মসূচির জন্য ২ হাজার কোটি ইউরোর বাড়তি ব্যয় দীর্ঘমেয়াদে যথেষ্ট নয়। চলতি বছর মূল্যবৃদ্ধির ধাক্কার ৯০ শতাংশ সামলানো সম্ভব হলেও ভবিষ্যতে আরও এমন উদ্যোগের প্রয়োজন হতে পারে।
সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে জার্মানির ১৬টি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করেছেন চ্যান্সেলর। সেখানে তিনি বলেন, আগামী বছরও জার্মানির সামনে বড় চ্যালেঞ্জ থাকবে। একই মত ভাইস চ্যান্সেলর ও অর্থনীতি বিষয়ক মন্ত্রী রোব্যার্ট হাবেকেরও। হাবেক মনে করছেন, মূল্যবৃদ্ধির কারণে আগামী বছর সামাজিক অস্থিরতার আশঙ্কা রয়েছে। বিশেষ করে শীতের মৌসুমে ঘর গরম রাখার ব্যয় অস্বাভাবিক মাত্রায় বেড়ে গেলে প্রবল ক্ষোভ দেখা দিতে পারে।
ফলে সামনের কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলায় শ্রমিক সংগঠনগুলোর সঙ্গেও বসা দরকার বলে মনে করছেন চ্যান্সেলর। তার সরকার মূলত যা করতে চাইছে তা হলো- দেশের সব মানুষের জন্য উদার ভর্তুকির পথে না হেঁটে স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু পদক্ষেপ নেওয়া।
জার্মানিতে মুদ্রাস্ফীতি ৮ ছুঁই ছুঁই : মে মাসে জার্মানিতে মুদ্রাস্ফীতির হার ৭.৯-এ পৌঁছেছে। দুই জার্মানি এক হওয়ার পর এই প্রথম মুদ্রাস্ফীতি এত বাড়ল। জার্মানির পরিসংখ্যান বিষয়ক সংস্থা ডিস্ট্যাট এ তথ্য দিয়েছে।
এপ্রিলেও মুদ্রাস্ফীতি সাম্প্রতিক সময়ের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছিল। তবে মে মাসে এপ্রিলের চেয়েও এক দশমাংশ বেড়ে ৭.৯ ভাগ হওয়ায় পরিস্থিতি জার্মানির একত্রীকরনের পরের সব খারাপ সময়কেই পেছনে ফেলেছে। ডিস্ট্যাটের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সর্বশেষ ১৯৭৩-৭৪-এর ভয়াবহ তেল সংকটের সময়েই শুধু এমন পরিস্থিতি দেখেছিল জার্মানি। এত উচ্চ হারের মুদ্রাস্ফীতির জন্য ইউক্রেন যুদ্ধ এবং যুদ্ধের কারণে জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধিকে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে হামলা চালায় রাশিয়া। তারপর থেকে জ্বালানির দাম হু হু করে বাড়ছে। ভোগ্যপণ্যের দামও বাড়ছে দ্রুত। গত বছরের মে মাসের তুলনায় জার্মানিতে জ্বালানির দাম বেড়েছে ৩৮.৩ ভাগ আর খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে শতকরা ১১ ভাগ।
সূত্র : ডয়েচে ভেলে।
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।