শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

বেসরকারি খাতে ধারাবাহিকভাবে কমছে ঋণ বিতরণ


Published: 2023-05-03 22:04:56 BdST, Updated: 2024-04-27 08:33:39 BdST


নিজস্ব প্রতিবেদক : চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের মুদ্রানীতিতে আগামী জুন পর্যন্ত বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১৪ দশমিক ১০ শতাংশ। তবে অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে (জুলাই-মার্চ) লক্ষ্যমাত্রার নিচে অবস্থান করছে ঋণ প্রবৃদ্ধি। অর্থাৎ বেসরকারি খাতে ধারাবাহিকভাবে কমছে ঋণ বিতরণ। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন বলছে, চলতি বছরের মার্চ মাস শেষে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশে। আগের মাস ফেব্রুয়ারি শেষে যা ছিল ১২ দশমিক ১৪ শতাংশ। মার্চ মাসে বেসরকারি খাতে ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১৪ লাখ ৪৬ হাজার ৮০৮ কোটি টাকা। আগের বছরের একই সময়ে (মার্চ-২০২২) যা ছিল ১২ লাখ ৯১ হাজার ৪৩৮ কোটি টাকা। তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি ছিল ১৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ। আগস্টে এটি বেড়ে ১৪ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছিল। তবে সেপ্টেম্বরে কিছুটা কমে ১৩ দশমিক ৯৩ শতাংশে নেমে আসে। এরপর টানা দুই মাস (অক্টোবর ও নভেম্বর) বেসরকারি খাতে ঋণের এই প্রবৃদ্ধি হয় ১৩ দশমিক ৯১ শতাংশ। ডিসেম্বরে এটি আরও কমে ১২ দশমিক ৮৯ শতাংশে নেমে আসে। তবে অর্থবছরের সপ্তম এবং চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে ঋণ প্রবৃদ্ধি নেমে আসে ১২ দশমিক ৬২ শতাংশে। পরের মাস ফেব্রুয়ারিতে আরও কমে দাঁড়ায় ১২ দশমিক ১৪ শতাংশ। সবশেষ মার্চ মাসে বেসরকারি খাতে ঋণের এই প্রবৃদ্ধি আরও কমে দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশে।

বেসরকারি খাতের ঋণের এই প্রবৃদ্ধি সাধারণভাবে দুই অঙ্কের ঘরেই থাকে। তবে ২০১৯ সালের নভেম্বরে এর ব্যত্যয় ঘটে। ওই মাসে প্রথমবারের মতো তা নেমে যায় ৯ দশমিক ৮৭ শতাংশে। তবে বৈশ্বিক মহামারি করোনার প্রভাব শুরুর পর ব্যাপক হারে এটি কমে গত ২০২০ সালের মে মাস ৭ দশমিক ৫৫ শতাংশে নেমে আসে। পরের মাস জুন থেকে ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে বেসরকারি খাতের ঋণের এই প্রবৃদ্ধি। এদিকে গত বছরের মার্চ থেকে দেশে ডলার সংকট প্রকট আকার ধারণ করে। এতে ডলারের মজুত কমছে। বর্তমানে দেশের ব্যবহার্য রিজার্ভ রয়েছে ৩০ দশমিক ৯৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এরই মধ্যে চলতি সপ্তাহে এক বিলিয়নের বেশি এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) আমদানি বিল পরিশোধ করতে হবে। এটি রিজার্ভের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করবে। ফলে আকু বিল পরিশোধের পর রিজার্ভের পরিমাণ ২৯ বিলিয়নের ঘরে নেমে যাবে। আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাবে যে পরিমাণ রিজার্ভ রয়েছে তা থেকে আরও ৫ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার বাদ দিয়েই ব্যবহার্য রিজার্ভ থাকবে দেশের। এতে রিজার্ভ ২৪ বিলিয়নের ঘরে নামতে পারে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, বৈশ্বিক মুদ্রাবাজারে স্বস্তি ফেরাতে আমদানি দায় কমানোর উদ্যোগসহ নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবুও সংকট কাটছে না। ডলার বিক্রিসহ অন্য খাতে ব্যয় কমাতে না পারলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ বাড়বেই। এসব কারণে অর্থনীতিতে সংকট কাটছে না।

সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।