শুক্রবার, ৬ ডিসেম্বার, ২০২৪, ২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

২০২৩ সালে ভালোর দিকে যাবে বাংলাদেশ অর্থনীতি


Published: 2023-01-26 23:02:58 BdST, Updated: 2024-12-06 14:01:42 BdST


ওয়াসি মাহিন: ইডিএফ ফান্ড ১ বিলিয়ন ডলার কমিয়ে ফেলছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আইএমএফ এর সাথে আলোচনায় যদি ভাল কিছু হয়ে থাকে তবে সেটি আর্থিক খাতের কিছু কারেক্টিভ মেজার্স। বাংলাদেশের রিজার্ভ যেটা বলা হয় এর থেকে ৮ বিলিয়ন কম ধরতে বলেছিল আইএমএফ । কিন্তু কেন? মূল কাহিনী হল, রিজার্ভ হল লিকুইড এসেট। যেটা চাহিবা মাত্র আপনি ফেরত পেতে পারেন। কিন্তু রিজার্ভের পরিমান যখন বৃদ্ধি পাচ্ছিল তখন রিজার্ভের অর্থ ব্যাবহারের জন্য অনেকের পরামর্শ আসতে থাকে। যেটা এক প্রকার ভুল। ভুল একারণে যে, ধরুন রিজার্ভের অর্থ দিয়ে আপনি রপ্তানিকারকদের সাপোর্ট দিতে গিয়ে রফতানি উন্নয়ন তহবিল (ইডিএফ) গঠন করলেন। উদ্দেশ্য, রপ্তানিকারকদের সল্প সুদে ফরেন কারেন্সিতে ঋন দেয়া। এটা আপনি করতেই পারেন। কিন্তু সমস্যা হল, লিকুইড এসেটের যে অংশটুকু দিয়ে আপনি ঋন দিয়েছেন সেটাকে একি সাথে লিকুইড এসেট (চাহিবামাত্র ফেরতযোগ্য) বা রিজার্ভ হিসাবে দেখাবেন আবার একি সাথে ঋন ও দিবেন সেটা হয়না। প্রদানকৃত ঋন স্বল্পমেয়দী হলেও সেটাকে লিকুইড এসেট হিসাবে দেখানোর সুযোগ নেই৷ এটা চাহিদাব মাত্র ফেরতযোগ্য সম্পদ নয়। এটা একাউন্টটিং মিসটেক। আবার একি সাথে আপনি রিজার্ভ থেকে অবকাঠামোতে ঋন দিবেন আবার সেটা রিজার্ভের অংশ থেকে না কমিয়ে দেখাবেন সেটা হয়না। যাহোক, যেই ৮ বিলিয়ন ডলার কম হিসাব করতে হবে রিজার্ভের থেকে সেটির ভেতর ৭ বিলিয়ন ডলার ছিল ইডিএফের। সেখান থেকে এখন ১ বিলিয়ন ডলার কমিয়ে আনা হয়েছে। আগামী ৫-৬ মাসের ভেতর প্রদানকৃত ফরেন কারেন্সিতে দেয়া ইডিএফের ফান্ড আদায় বৃদ্ধি ও নতুন ঋন দেয়া কমিয়ে এই লিমিট আরো ৩-৪ বিলিয়ন ডলার কমিয়ে আনা হবে। ফলে মোটামুটি আগামী ৬ মাসে ৪ বিলিয়ন মত রিজার্ভের অর্থ ফ্রি হবার সুযোগ আছে।
সম্প্রতি অবাক হয়েছি একটি রিপোর্ট থেকে। অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে এলসি নিষ্পত্তি বেড়েছে প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলার বা ৭ শতাংশের অধিক। এত বেশি পরিমান অমদানির উপর কড়াকড়ি করার পরো এলসি নিষ্পত্তি ৩ বিলিয়ন বৃদ্ধি পাওয়া অবাক করার মত। তবে সুখবর হল এলসি খোলা কমেছে। ২০২১ সাথে বাংলাদেশ প্রায় ৯০ বিলিয়ন ডলারের আমদানি করে ইতিহাস সৃষ্টি করে যার ফলে প্রায় ৩৩ বিলিয়ন ডলার বাণিজ্য ঘাটতি দেখা যায়। এই ধাক্কা সামলানো সহজ নয়। ২০২০ সালে করোনার কারণে বন্ধ থাকার পর মোটামুটি ধুমিয়ে আমদানি করা হয়েছিল ২০২১ সালে । তবে এর একটি অংশ যে পাচার হয়েছে সেটা সহজে অনুমেয়। যাহোক, অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসের এলসি নিষ্পত্তি বৃদ্ধি নিয়ে বলা হচ্ছে যে জ্বালানি, গ্যাস, খাদ্য পণ্যের উচ্চমূল্যে এসবের এলসি নিষ্পত্তিতেই চলে যাচ্ছে সব ডলার। রুশ ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে অনেকে বলেছিল যে ২০২৩ সালে বাংলাদেশ দেওলিয়া হবে। আমরা সমালোচনা করব কিন্তু নিজ দেশের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ না ছড়ানো ভাল। আমরা আশা করছি ২০২৩ সালে ভালোর দিকে যাবে বাংলাদেশ। কারণ স্বরনকালের সবথেকে খারাপ সময় গেছে ২০২২। এর থেকে আরো বেশি খারাপ হবার সুযোগ নেই। আমরা শান্তি চাই। যেকোন অশান্তি সাধারন মানুষ ও দরিদ্র জনগনের উপর জাহান্নাম হিসাবে নেমে পড়ে। বিশ্ব এ বছর স্থীতিশীল হোক। শান্তি নামুক এই ধরায়। এই প্রার্থনা।

সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।