মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

চাল রফতানি বাড়ানে‍ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাকিস্তান


Published: 2023-08-02 20:50:47 BdST, Updated: 2024-04-30 19:31:58 BdST

বিজনেস ডেস্ক: চাল রফতানি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাকিস্তান। সম্প্রতি চাল রফতানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার পর এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে পাকিস্তান। রাইস এক্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন অব পাকিস্তানের (আরইএপি) বরাত দিয়ে ‘দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল পিকে’ এই তথ্য জানিয়েছে।ভারত জানিয়েছে অভ্যন্তরীণ বাজার স্থিতিশীল রাখতে নন-বাসমতি চাল রফতানি করবে না তারা।    উল্লেখ্য, বিশ্বের সর্ববৃহৎ চাল রফতানিকারক দেশ ভারত। বিশ্বের মোট চাহিদার ৪০ ভাগ চাল আসে এই দেশ থেকেই। চাল রফতানিতে শীর্ষে থাকা অন্য দেশগুলো হল- থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, পাকিস্তান এবং যুক্তরাষ্ট্র।

আরইএপির চেয়ারম্যান চেলা রাম কেওলানি বলেছেন, গত অর্থ বছরে পাকিস্তান ৩৭ লাখ টন চাল রফতানি করেছে। যার মূল্য ছিল ২ দশমিক ১৪ বিলিয়ন ডলার। বিভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জের মধ্যেও তারা এই পরিমাণ চাল রফতানি করে। তিনি বলেন, ভয়াবহ বন্যা, শস্য সংকটসহ নানা ধরনের চ্যালেঞ্জের মধ্যেও আমরা ৩৭ লাখ টন চাল রফতানি করতে সক্ষম হই। আরইএপি এর চেয়ারম্যান চলতি অর্থবছরে ৫০ লাখ টন চাল রফতানির লক্ষ্যমাত্রার ব্যাপারে আশাবাদী। এই রফতানি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে জুলাইতে। চাল রফতানির ওপর ভারতের নিষেধাজ্ঞা বিশ্ববাজারের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তবে এটা পাকিস্তানের জন্য সুযোগ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

বুধবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২০ জুলাই নন-বাসমতি সাদা চাল রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ভারত। মূলত অভ্যন্তরীণ বাজারে চালের দাম স্থিতিশীল রাখতে এই উদ্যোগ নিয়েছে দেশটির সরকার। এর প্রভাবে যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডায় ভারতীয় চালের সংকট দেখা দেয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, মানুষ আতঙ্কিত হয়ে চাল কিনছেন। যার প্রভাবে বেড়ে গেছে এর দামও।
বিশ্বব্যাপী কয়েক হাজার জাতের চাল উৎপাদন হয়। তবে আমদানি-রফতানি হয় মূলত চার জাতের চাল। এরমধ্যে সরু লম্বা দানার ইন্ডিকা চাল সবচেয়ে বেশি বেঁচা-কেনা হয়। আর বাকিগুলো হল- সুগন্ধি বাসমতি, ছোট দানার জাপোনিকা; যেটি সুসি এবং রিসোটস তৈরিতে ব্যবহৃত হয় এবং আঠালো চাল; যা মিস্টি তৈরিতে ব্যবহার করা হয়।

চাল আমদানিকারক দেশের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে চীন, ফিলিপাইন এবং নাইজেরিয়া। অপরদিকে অভ্যন্তরীণ বাজারে ঘাটতি দেখা দিলে ইন্দোনেশিয়া এবং বাংলাদেশ চাল আমদানি করে। এখন আফ্রিকা মহাদেশেও চালের চাহিদা বাড়ছে। এছাড়া কিউবা এবং পানামাতেও শক্তির মূল উৎস হলো চাল। গত বছর ভারত ১৪০টি দেশে ২২ মিলিয়ন টন চাল রফতানি করেছে। যার মধ্যে ৬ মিলিয়ন টন ছিল তুলনামূলক কমদামী ইন্ডিকা চাল। (গত বছর বিশ্বব্যাপী চাল আমদানি-রফতানি হয়েছে প্রায় ৫৬ মিলিয়ন টন)।

২০২২ সালে বিশ্বব্যাপী যত চাল আমদানি-রফতানি হয়েছে তার ৭০ শতাংশ ছিল ইন্ডিকা চাল, আর এখন ভারত সেই চাল রফতানি বন্ধ করে দিয়েছে। গত বছর দেশটি খুদের চাল এবং বাসমতি চাল রফতানির ওপর ২০ শতাংশ কর আরোপ করে। এরপরই আসল পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞা।

প্রত্যাশিতভাবেই জুলাইয়ে ভারতের চাল রফতানি নিষেধাজ্ঞা বিশ্বব্যাপী আতঙ্ক সৃষ্টি করে। আইএমএফের অর্থনীতিবিদ পিয়ে-অলিভার গোরিনচাস বলেছেন, এই নিষেধাজ্ঞা চালের দাম বাড়িয়ে দেবে এবং বিশ্বব্যাপী এই শস্যের দাম ১৫ শতাংশের বেশি বাড়তে পারে

সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।