শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি কোন দিকে এগোচ্ছে ?


Published: 2023-03-08 22:38:42 BdST, Updated: 2024-04-19 17:41:02 BdST

কুদরাত-ই-খোদা

বাংলাদেশের রাজনীতি একটি নতুম অধ্যায়ের দিকে এগোচ্ছ । চলতি বছরটি রাজনীতি এবং আগামী নির্বাচনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন নির্বাচন কমিশনার আনিসুর রহমান । তার ধারণা সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে চলতি বছরের শেষের দিকে কিংবা আগামী বছরের প্রথম দিকে, তবে ১০ই জানুয়ারির পূর্বে, জাতীয় নির্বাচন। গত কয়েকদিন খোজখবর নিয়ে জানা গেছে নির্বাচন কমিশন একটি অবাধ, সুষ্ঠ, নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমাদের চাপের মধ্যে রয়েছে । যদিও বিষয়টি অফিসিয়ালি নির্বাচন কমিশনের কেও স্বীকার করছে না । বাংলাদেশের রাজনীতির বিষয়ে বৈদেশিক চাপের দৃশ্যমান পরিবেশ এখন প্রতিদিনই দেখা যাচ্ছে । ক্ষমতাসীন সরকারের মন্ত্রীদের সাম্প্রতিক কথন নতুন রাজনৈতিক ভাবনার আভাস দিচ্ছে । গতকাল বুধবার কৃষিমন্ত্রী জানিয়েছেন, কারাবন্দী খালেদা জিয়া রাজনীতি করতে পারবেন । তার দুদিন আগে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছিলেন, খালেদা জিয়া রাজনীতি করতে পারবেন, তবে নির্বাচন করতে পারবেন না । ধারণা করা হচ্ছে, ধীরে ধীরে একটি অদৃশ্য পর্দা সরে যাচ্ছে । আগামী মাসের প্রথম দিকেই বেশ কিছু বিষয় খোলাসা হয়ে যাবে । এই দিকে ভূ-রাজনৈতিক ইসুতে বাংলাদেশ যে গুরুত্বপূর্ণ তা পশ্চিমা দেশ, ভারত, রাশিয়া ও চিনের আচরণেই স্পষ্ট । অপরদিকে, আগামী নির্বাচনে খোদ জাতিসংঘ সুষ্ঠ, অবাধ ও নিরপেক্ষ ভাবে আয়োজনের ব্যাপারে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে । রাজনৈতিক  বিশ্লেষকদের মতে দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা বর্তমান সরকার বেশ চাপের মুখেই আছেন । বাংলাদেশে অর্থনৈতিক সংকট, ডলার সংকট, মুদ্রা স্ফীতির কারণে নিম্নবিত্ত সহ সাধারণ মানুষ যখন নাকাল, ঠিক পাশাপাশি ব্যবসায়ীরাও ন্যূনতম স্বস্তিতে নেই । একজন প্রখ্যাত ব্যবসায়ী এই প্রতিনিধিকে বলেছেন, আমাদের চোখের সামনে সবকিছু ভেঙ্গে পড়ছে । 

এই দিকে বাংলাদেশ এবং রাশিয়ার সম্পর্ক কোন দিকে গড়ায় সেটা এখন প্রশ্নের সম্মুখীন । কিছুদিন আগে রাশিয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে তলব করা হয় । মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রাপ্ত রুশ জাহাজকে কেনো নোঙ্গোর করতে দেওয়া হলো না, এর কারণ জানতে চাওয়া হয় । এই দিকে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব ঢাকা সফর করে, সরকারের প্রতি ভারতের সমর্থন রয়েছে বলে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তার মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন রাজপথের বিরোধী দল বিএনপি সহ সমমনা দলগুলো । আগামী রমজান মাসকে সামনে রেখে উর্ধ্মূখী দ্রব্যমূল্যের লাগাম টেনে ধরে না রাখলে সরকার যে বেকায়দায় পরবেন, তাতে কোনো সন্দেহ নাই । প্রতি বছরের মত চলতি বছরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তেমন কোনো তোড়জোড় নেই । 

এদিকে, বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি ‘রেমিটেন্স’ প্রবাহ গত তিন সপ্তাহ ধরে কমে আসছে । এটা ভবিষ্যৎ অর্থনীতির জন্য অশনীসংকেত । অর্থনীতিবিদরা বলছেন, আগামী এপ্রিল-মে মাস ব্যবসা-বাণিজ্য, আমদানী-রপ্তানী কি অবস্থায় পৌছাবে তা নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না । গত কয়েকদিন রাজধানী সহ আশে পাশের কাচা বাজার গুলো ধুরে দেখা গেছে, দেশে উৎপাদিত পণ্যের দাম লাগাম ছাড়া, যা মধ্যবিত্তের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে । এই অসহনীয় পরিস্থিতি ইতিপূর্বে দেখা যায়নি । পাশাপাশি শীত মৌসুম শেষে গরমকাল চলে আসায় বিদ্যুৎ পরিস্থিতি আবার অস্বাভাবিক আকার ধারণ করবে । বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে জানা গেছে আগামী গ্রীস্ম মৌসুমে প্রয়োজনের তুলনায় ৩০০০ মেগাওয়াট কম বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে । সবমিলে আর্থসামাজিক – রাজনৈতিক পরিস্থিতি যে খুব একটা সুখকর হচ্ছে না, তা অনেকটা পরিষ্কার । এখন প্রশ্নটা হলো সমাধানটা কি?

সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।